Tuesday 8 October 2019

যে শহরগুলি ১০০ বছরে পানিতে নিমজ্জিত হতে পারে


যে শহরগুলি ১০০ বছরে পানিতে নিমজ্জিত হতে পারে





গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির মধ্যে যে গ্যাসটি সব’চে বেশী ছড়ায় তা হল কার্বন ডাই অক্সাইড বা সিও২। প্রতি বছর আমাদের পরিবেশে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ ৩৫ বিলিয়ন কিলোটন কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়ায়। গ্রিনহাউস গ্যাস বায়ুমণ্ডলে তাপ আটকে রাখে, যা আমাদের পৃথিবীকে গরম করে এবং বিশ্বজুড়ে বরফ বা গ্লেসিয়ার গলিয়ে ফেলে। ফলে মহাসাগরে ক্রমাগত পানি বৃদ্ধি পায়। আবহাওয়াবীদদের মতে, আমরা যদি কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়ানো তীব্রভাবে না কমিয়ে যথারীতি ব্যবসা চালিয়ে যাই, তবে আগামী ১০০ বছরে আমাদের পৃথিবীর তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে, যা বরফ গলিয়ে সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে বিশ্বের অনেক শহর যেখানে ৪৭ থেকে ৭৬ কোটি মানুষ বাস করে।




পৃথিবীতে যে দেশগুলি সব’চে বেশী কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়ায়ঃ
১। চীন, ২। যুক্তরাষ্ট্র, ৩। ইন্ডিয়া, ৪। রাশীয়া, ৫। জাপান, ৬। জারমানী, ৭। ইরান, ৮। দক্ষিন কোরিয়া, ৯। কানাডা ইত্যাদি দেশ সমুহ। আমার আলোচনা এই সিরিয়াল অনুযায়িই হবে, শুধুমাত্র নিজের দেশ, বাংলাদেশ ছাড়া।






প্রথমে নিজের দেশ, বাংলাদেশ থেকে শুরু করি।

ঢাকা, বাংলাদেশঃ

বাংলাদেশের রাজধানী এবং সর্বাধিক জনবহুল শহরটি বুড়িগঙ্গা নদীর ঠিক উত্তরে বর্তমান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১.১৪ মিটার উচুতে অবস্থিত। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে ২ কোটি মানুষের শহর ঢাকা শহর পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে।





খুলনা, বাংলাদেশঃ

বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর খুলনা বঙ্গোপসাগরের উত্তরে একটি ব-দ্বীপ ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে ১.৩৪ কোটি মানুষের শহর খুলনা পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে।


একই সাথে চট্টগ্রাম ও বরিশাল শহরগুলি সহ দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশের বেশিরভাগ অংশ পানিতে ভাসতে পারে।





এরপরে চীনঃ

হংকং, চীনঃ

হংকং দক্ষিণ চীন সাগরের সইকতের চারদিকে ঘিরে অবস্তিত, বর্তমান সমুদ্রপৃষ্ঠের সম উচ্চতায় বরতমান। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে এই মেগাসিটির বেশিরভাগ অংশ এবং ১ কোটি মানুষের ঘরগুলি সাগর গরভে নিমজ্জিত হতে পারে।




সাংহাই, চীনঃ

সাংহাই চীনের সর্বাধিক জনবহুল শহর, বিশ্বের বৃহত্তম বন্দরগুলির একটি, বিশ্বের বৃহত্তম শহর, ইয়াংজি নদী ও পূর্ব চীন সাগরের তীরে অবস্থিত। এ শহর বর্তমান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ থেকে ৫ মিটার উপরে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে এই ২.২০ কোটি মানুষের ঘরগুলি ও বাসিন্দারা সাগর গরভে ডুবে যেতে পারে।





তিয়ানজিন, চীনঃ

তিয়ানজিন শহরটি হৈ নদীতে মিশে যাওয়া বেশ কয়েকটি জলপথ এবং খালের পাড়ে অবস্থিত, চীনের তৃতীয় বৃহত্তম সমতল পলিভূমির শহর, বর্তমান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫ মিটার উপরে অবস্থিত। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে ১.২৫ কোটি তিয়ানজিন বাসিন্দার বাড়িগুলি পানিতে নিমজ্জিত হতে পারে।





তাইজৌ, চীনঃ

পূর্ব চীন সাগরের তীরে শহরটির অবস্থান। বরষার জলবায়ুর কারণে তাইজৌ ইতিমধ্যে বন্যার সাথে লড়াই করছে। দীর্ঘ সমুদ্র উপকূলরেখায় অবস্থিত দ্রুত বর্ধমান দ্বীপের শহরটি টাইফুনের পক্ষেও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে শহরটির ৯০ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া হতে পারে।





শান্তো, চীনঃ

শান্তো শহরটি চীনের দক্ষিণ অঞ্চলে পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত মেই ও হ্যান নদীর তীরে অবস্থিত, যা মহাসাগরগুলির পানির উত্থানের সাথে সাথে বন্যার ঝুঁকিতে পরে। ২০১৮ সালে, শহরটি কয়েক দিনের রেকর্ড বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যার কবলে পরে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে শহরটির ৭৪ লক্ষ মানুষ পানির নিচে বাস করতে হতে পারে।





দেখি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা আমেরিকার অবস্থাঃ



নিউ ইয়র্ক সিটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রঃ

আটলান্টিক মহাসাগর থেকে উতপত্তি হাডসন নদী তীরে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরটি অবস্থিত। এর উপকূলে সমুদ্রের পানির উত্থান অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বেড়েছে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে নিউ ইয়র্ক শহরের ৮৫ লক্ষ মানুষের ২৩ শতাংশ মানুষ পানির নীচে থাকতে হতে পারে।





নিউ অরলিন্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রঃ

মেক্সিকো উপসাগরে মিসিসিপি নদীর ডেল্টার শীর্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স শহরটি অবস্থিত। শহরের কিছু অংশ ইতিমধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের ১.৫ থেকে ৩ মিটার নীচে, বিগ ইজি ক্যাটরিনার মতো মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ২০০৫ সালে শহরের চার-পঞ্চমাংশে প্লাবিত হয়েছিল এবং প্রায় ১,২০০ লোক মারা গিয়েছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে, নিউ অরলিন্সকে পানির নীচে যেতে ১০০ বছর অপেক্ষা করতে নাও হতে পারে। সমুদ্রের পানি বাড়তি দেখে আমেরিকার আর্মি কর্পস অফ ইঞ্জিনিয়ার্স বলেছে যে শহরটি রক্ষার জন্য সম্প্রতি ১৪ বিলিয়ন ডলারে নির্মিত শহর রক্ষা বাধ বেশী হলে চার বছর সুরক্ষা প্রদান করতে পারে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে নিউ অরলিন্স শহরের ৪ লক্ষ মানুষ পানির নীচে থাকতে হতে পারে।





বোস্টন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রঃ

আমেরিকার পূর্ব উপকূলে চারলস নদীর তীরে অবস্থিত ম্যাসাচুসেটসের রাজধানী বোস্টন শহর, যেখানে সমুদ্রগুলির পানি গড়ের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে বোস্টন শহরের ৭ লক্ষ মানুষের ২০ শতাংশ লোকের বাড়িঘর পানিতে নিমজ্জিত হতে পারে।





মিয়ামি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রঃ

চারিদিকে সমুদ্র দিয়ে ঘেরা মিয়ামি শহর ও মিয়ামি সমুদ্র সৈকত সমতল, নিম্ন-নিচু অঞ্চলগুলি চুনাপাথরের উপর নির্মিত। সমুদ্রের তীব্র স্রোত এর পানির উচ্চতা দ্রুত গতিতে বাড়াচ্ছে, এবং এমনকি যখন বৃষ্টি না হয় তখনও মায়ামি শহরকে বন্যার ঝুঁকিতে ফেলছে, । যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে মিয়ামি শহরের ২৭ লক্ষ মানুষের ৯৩% জনগণ পানির নীচে ডুবে যেতে পারে।





হিউস্টন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রঃ

হিউস্টন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ বৃহত্তম শহর ‘বাফেলো বেইউ’ নদীর তীরে অবস্থিত। অত্যধিক ভূগর্ভস্থ পানির পাম্পিংয়ের কারণে প্রতিবছর পাঁচ সেন্টিমিটার হারে হিউস্টনের কিছু অংশ ডুবে যাচ্ছে, হার্ভির মতো হারিকেনের ঝুঁকিকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে মিয়ামি শহরের ২৭ লক্ষ মানুষ বন্যার কারণে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হতে পারে।





যাই একটু পাশের দেশ, ভারতেঃ



কলকাতা, ভারতঃ

কলকাতা ভারতের অন্যতম বৃহত্তম শহর এবং অন্যতম প্রধান বন্দর বঙ্গোপসাগরের মাথা থেকে উজানে হুগলি নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত। শহরটি বর্তমান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ মিটার উপরে অবস্থিত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে ও গলে যাওয়া হিমালযয়ের বরফ গলে, শহরটির প্রায় ১.২০ কোটি মানুষের ঘর বন্যায় প্লাবিত হতে পারে।





মুম্বই, ভারতঃ

মুম্বই ভারতের সর্বাধিক জনবহুল শহর এবং বিশ্বের সর্বাধিক ঘনবসতিযুক্ত শহরের একটি, আরব সাগরের উপকূলে নিচু সমভূমিতে অবস্থিত এবং এর এক-চতুর্থাংশ বর্তমান সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে রয়েছে। মুম্বই ইতিমধ্যে "অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের সময় নিয়মিত বন্যার পানি নিষ্কাশন করতে" হিমশিম খাচ্ছে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে ১ কোটি মানুষের শহর মুম্বাই পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে।





এবার দেখি জাপানঃ


টোকিও, জাপানঃ
সুমিদা নদী তীরে অবস্থিত জাপানের রাজধানী টোকিও এক বিশাল মহানগরী, দেশটির বৃহত্তম নগরী ও শিল্পকেন্দ্র। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে শহরটি বেশ বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারত, বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দেশের মতো জাপানও গড়ের তুলনায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেশি সমুদ্র-স্তরের পানির উত্থান দেখতে পেতে পারে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে শহরটির ১.৪০ কোটি মানুষ বন্যার দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে।





ওসাকা, জাপানঃ
জাপানের অভ্যন্তরীণ সাগরের পূর্ব প্রান্তে এবং বঙ্গোপসাগরের তীরে ওসাকা শহরটি অবস্থিত, বদ্বীপ মহানগরী একাধিক নদীর ও পললভূমিতে প্রসারিত। সুনামি এবং টাইফুনের কারণে শহরটি ইতিমধ্যে বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে, এবং মহাসাগরগুলির পানির উত্থানের সাথে সাথে ঝড়ের তীব্রতা ও বিপদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে এই বন্দর নগরীতে ৬২ লক্ষ মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে পড়তে পারে।





এবার কানাডাঃ


ভ্যানকুভার, কানাডাঃ

কানাডার পশ্চিম পাশে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার শহর গ্রেটার ভ্যানকুভার ‘ফ্রেশার’ নদীর তীরে অবস্থিত। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে ভ্যানকুভার শহরের ৬ লক্ষ মানুষকে আভ্যন্তরীণ স্থানান্তর করতে বাধ্য হতে পারে।






দেখি থাইল্যান্ডে কি হচ্ছেঃ


ব্যাংকক, থাইল্যান্ডঃ

ব্যাংককের রাজধানী থাইল্যান্ড, উপসাগর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে চাও ফ্রেয়া নদীর তীরে অবস্থিতি এবং দেশটির প্রধান বন্দর। জলবায়ু পরিবর্তন ও বৃষ্টিপাতের কারনে শহরটিতে বন্যা হচ্ছে। এশিয়ার ভেনিস নামে খ্যাত ব্যাংকক শহরটি বছরে দুই সেন্টিমিটারের উদ্বেগজনক হারে ডুবে যাচ্ছে এবং এটি বিভিন্ন জায়গায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নীচে নামছে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে শহরটির ৮৩ লক্ষ মানুষের ঘর-বাড়ী পানির নিচে ডুবে যেতে পারে।






এবার দেখি ইন্দোনেশিয়া


জাকার্তা,ইন্দোনেশিয়াঃ

জাকার্তা ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর, ১৩ টি নদীর তীরে, জাভা দ্বীপের একটি নিচু ও জলাবদ্ধ পলল সমভূমিতে অবস্থিত। শহরটি জলাবদ্ধ জলাভূমিতে নির্মিত বিল্ডিংগুলির ওজনে বিল্ডিংগুলি মাটির নিচে ডুবে যাচ্ছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত ডুবে যাওয়া শহর। গত ১০ বছরে শহরটি ২.৫ মিটার মাটির নিচে ডুবে গেছে। পরিস্থিতি এতটাই মারাত্মক যে দেশটি রাজধানী স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে। অনুমান অনুযায়ী ২০৫০ সালের মধ্যে উত্তর জাকার্তার ৯৫ শতাংশ পানির নিচে ডুবে যেতে পারে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে শহরটির ৯৫ লক্ষ মানুষের ঘর-বাড়ী পানির নিচে চলে যেতে পারে।





সুরবায়া, ইন্দোনেশিয়াঃ

মাস নদীর দুই তীরে, জাভা দ্বীপের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে ইন্দোনেশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সুরবায়া অবস্থিত। প্রতি বছর প্রায় সমুদ্রের পানির উত্থানে শহরটি বন্যার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সর্বোচ্চ ৩ মিটার উপরে অবস্থিত। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে শহরটির ৫৫ লক্ষ মানুষ সুরবায়া থেকে সরে যেতে বাধ্য হতে পারে।





হ্যানয়, ভিয়েতনামঃ
দক্ষিণ চীন সাগর থেকে ৮৫ মাইল দূরে, ‘রেড নদী’ তীরে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় অবস্থিত । বনভূমি নিধন ও জলোচ্ছ্বাস ইতিমধ্যে উপকূলীয় দেশের বেশিরভাগ অংশকে বন্যার ঝুঁকিতে ফেলেছে, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুকি আরও বেড়েছে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে হ্যানয়ের ৭৬ লক্ষ মানুষ স্থানান্তর করতে বাধ্য হতে পারে।





হো চি মিন, ভিয়েতনামঃ

ভিয়েতনামের হো চি মিন শহরটি সাইগন নদীর তীরে, সমুদ্রপৃষ্ঠের ০.৫ থেকে ১ মিটার উপরে অবস্থিত। শহরটি ইতিমধ্যে ঘন বন্যা, সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, ভারী বৃষ্টি ও নদীর বন্যার সাথে পরিচিত। সময় উপযোগী সঠীক ব্যাবস্থা না নেয়া হলে, পরিবেশ বিজ্ঞানী পাওলো স্কুসোলিনি এবং তার সহকর্মীরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে এ শহরে বন্যার ঝুঁকি দশগুণেরও বেশি বাড়তে পারে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে হো চি মিন, ৬৯ লক্ষ মানুষ উচ্চতর ভূমিতে ফিরে যেতে বাধ্য হতে পারে।






কুইজন সিটি, ফিলিপাইনঃ

ফিলিপাইনের সবচেয়ে জনবহুল শহর কুইজন সিটি। ভারী বৃষ্টিপাত হলেই শহরটি বন্যার ঝুঁকিতে পড়ে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে কুইজন সিটির ২৯ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।






আলেকজান্দ্রিয়া, মিশরঃ

ইতিহাস খ্যাত বদ্বীপ শহর মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া ভূমধ্যসাগরের তীরে ও নীল নদীর পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। চারপাশের পানির উত্থানের সাথে সাথে আলেকজান্দ্রিয়ার বিখ্যাত সৈকতগুলি অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে আলেকজান্দ্রিয়া শহরের ৫ লক্ষ মানুষের ঘর বাড়ী পানিতে ডুবে যেতে পারে।






লন্ডন, ইংল্যান্ডঃ
ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডন থেমস নদীর তীরে অবস্থিত। বিশ্বের অন্যান্য প্রধান বন্দর শহরগুলির মতো লন্ডনও সমুদ্র-স্তর বৃদ্ধির কারণে মারাত্মক বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। ডুবে যাওয়া এবং জল উত্তোলনের মতো সমস্যাগুলির কারণে ইংল্যান্ডের রাজধানী বিশেষতঃ দুর্বল। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে লন্ডন শহরের ৮৮ লক্ষ মানুষ অনেক বিপদে পরতে পারে।






ভেনিস, ইতালিঃ

ইতিহাস বিখ্যাত ইতালির বন্দর নগরী ভেনিস গ্রান্ড ক্যানালের দুই তীরে অবস্থিত। চারপাশের পানির উত্থানের ফলে শহরটির বছরে প্রায় ০.২ সেন্টিমিটার হারে ডুবে যাচ্ছে, উচ্চ জোয়ারের ফলে বন্যার ঝুঁকিতে পরছে। যদি অনুমানগুলি সঠিক হয় তবে শতাব্দীর শেষদিকে ভূমধ্যসাগরীয় সমুদ্রের মাত্রা ১.৫ মিটার বৃদ্ধি পেতে পারে, ফলে ভেনিস শহরে বছরে চারবারের পরিবর্তে দিনে দু'বার বন্যার সৃষ্টি করতে পারে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে ভেনিস শহরের ৬ লক্ষ মানুষ অনেক বিপদে পরতে পারে।






রটারডাম, নেদারল্যান্ডসঃ
নরথ সাগর’ থেকে ১৯ মাইল দূরে ‘নিউই মাস’ নদীর দুই ধারে নেদারল্যান্ডের বন্দর নগরী রটারডাম অবস্থিত। এই ডাচ শহরের ৯০ শতাংশ সমুদ্রপৃষ্ঠের নীচে অবস্থিত। রটারড্যামের মানুষ গুলো পানির সাথে লড়াই করে বাঁচতে শিখছে। মহাসাগরে পানির উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে রটারডাম সহ অন্যান্য শহরগুলি আরও ভাল ড্রেনেজ এবং ডাইক, বাঁধ এবং সমুদ্রের পানির নেটওয়ার্কগুলির সমাধানের সন্ধান করছে। পানির উত্থান অব্যাহত থাকার সাথে সাথে তাদের সিস্টেমগুলি কতটা ভালভাবে ধরেছে তা কেবল সময়ই বলে দেবে।






লাগোস, নাইজেরিয়াঃ

চারিদিকে পানি দিয়ে বেস্টিত আফ্রিকার বৃহত্তম শহর লাগোন একটি দ্বীপপুঞ্জ, বালুচর এবং ছোট ছোট লেকের উপর নির্মিত। নাইজেরিয়ার এই শহর সমুদ্রপৃষ্ঠের ৭ মিটার উপরে অবস্থিত। এখানকার ৭০% লোক বস্তিতে বাস করেন। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে লাগোস শহরের ১.৭৫ কোটি মানুষ সব’চে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারেন।






রিও ডি জেনিরো, ব্রাজিলঃ

দক্ষিন-পুরব ব্রাজিলের সমুদ্র উপকূলীয় মেগাসিটি রিও ডি জেনিরো গুয়ান্ডু নদীর তীরে অবস্থিত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানির উত্থান হওয়ায় এর নিম্নভূমি অঞ্চলগুলি ঝড়ের তীব্র ঝুঁকিতে রয়েছে। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে রিও ডি জেনিরো শহরের ১.৩৩ কোটি মানুষ উচ্চতর স্থলে যেতে বাধ্য হতে পারে।






বুয়েনোস আইরেস, আর্জেন্টিনাঃ

আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনোস আইরেস আটলান্টিক মহাসাগর থেকে ১৫০ মাইল দূরে রিও দে লা প্লাতা নদীর তীরে অবস্থিত। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে বা সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৮.৯ মিটার বাড়ে, তবে বুয়েনোস আইরেস শহরের ১.৫০ কোটি মানুষকে আভ্যন্তরীণ স্থানান্তর করতে বাধ্য হতে পারে।





পরিশেষেঃ

আশুন আমরা সবাই আমাদের পৃথিবীকে শক্তিশালী করি, পরিবেশ রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করি এবং পৃথিবীকে আমাদের সন্তান্দের বসবাস উপযোগী রেখে যাই। জলবায়ু সংকট সমাধানে আমরা পৃথিবীর বন্ধুদের সমর্থন কামনা করছি।



ধন্যবাদ।

ফিরোজ নোমান

লন্ডন

সোমবার ০৭/১০/২০১৯


Friday 4 October 2019

Brent Linen Hire - 02034 881616 - www.brentlinenhire.co.uk




Commercial laundry services London


Commercial laundry services London




Welcome to Brent Linen Hire and Laundry Services. We are a family-run commercial laundry services business with excellent reputation and established in 2010. We are specialised in high quality linen hire and contract laundry, servicing London's prestigious high-end restaurants and hotels in London and surrounding cities. We work as partners with all our valued clients such as hotels and restaurants in London. We are a one stop shop for linen Hire and Laundry Services for hotels and restaurants.




Services offered:


We supply a huge range of high-quality linen, impeccable cleaning & reliable, efficient delivery on time every time including table linen, napkins, and chef wear. Our service is guaranteed and we will not let you down. We offer linen hire professional commercial laundry services to hotels, restaurants, events, parties, wedding, spa, gym, food manufacturers, bakeries, etc. in London and surrounding cities. We offer free pick up & delivery and quick and efficient services consistent reliability at competitive prices. We are a one stop shop for all your commercial laundry needs. We offer dedicated stock for your organisation high thread counts.




Our Products:


Brent Linen Hire and Commercial Laundry Services supply and laundering of protective workwear, workwear protection at rental terms that is suitable to your business. High performance linen / fabric, premium quality, very comfortable to wear. Such as:




For commercial laundry / contract laundry services uk


Chef jackets / coats / uniforms / workwear

Aprons

Trousers

Hats

Kitchen cloths / tea towels

Napkins

Tablecloths / Table cloths / Table slips



For hotel linen hire and laundry service London


Duvet Covers

Bedsheets

Pillow cases

Bath towels / Bath sheets

Face towels

Bath mats




Our Commercial Laundry Equipment and Chemicals:


We use high quality soaps and detergents, and the latest commercial laundry equipment, to ensure the perfect cleaning and save energy so that we can save our planet from carbon foot print for future generation. As a linen and commercial laundry service company in London, we understand the requirements and importance of our services.




If you need a reliable and cost effective linen and commercial laundry services, free collection and delivery service, then call us on 020 3488 1616 or email us at info@brentlinenhire.co.uk for a personalised competitive quote now! Visit us www.brentlinenhire.co.uk